ঢাকা, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে চিকিৎসকদের বাতলে দেওয়া ৫ পানীয়ের ভূমিকা

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৪:০০:৩৭
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে চিকিৎসকদের বাতলে দেওয়া ৫ পানীয়ের ভূমিকা

প্রতিবেদনের মূল কথা: রক্তপ্রবাহে বিদ্যমান চর্বির একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ হলো কোলেস্টেরল, যার মধ্যে রয়েছে উপকারী এবং ক্ষতিকারক উভয় প্রকারভেদ। ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল বা লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (LDL) যখন মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়, তখন এটি রক্তবাহী ধমনীর স্বাভাবিক প্রবাহকে ব্যাহত করে, যার ফলে হৃদরোগের মতো গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি বহুলাংশে বেড়ে যায়।

বর্তমান জীবনযাত্রাই প্রধান কারণ:

চিকিৎসকদের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আধুনিক জীবনযাত্রার কিছু অভ্যাসের কারণে এই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ (যা কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবন থেকে আসতে পারে), পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, এলোমেলো খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ এবং একটানা দীর্ঘক্ষণ আসনবদ্ধ জীবন যাপনের কারণে এই ক্ষতিকারক চর্বি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা সরাসরি হার্টের স্বাস্থ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করে।

বিশেষজ্ঞদের মত, জীবনধারায় কঠিন পরিবর্তন না এনেও শুধুমাত্র কিছু স্বাস্থ্যকর পানীয়কে দৈনিক রুটিনে যুক্ত করলে এই সমস্যা মোকাবিলার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই পানীয়গুলি এলডিএল-এর মাত্রা কমিয়ে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং তুলনামূলক সহজ উপায়ে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকেরা যে ৫টি পানীয় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন, তাদের কার্যকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো:

এলডিএল কমানোর ৫ শক্তিশালী পানীয়

১. গ্রিন টি (Green Tea)

ফ্ল্যাভোনয়েডস নামক শক্তিশালী প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর গ্রিন টি, ক্ষতিকারক এলডিএল কমাতে সরাসরি সহায়তা করে। এটি শুধু শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রদাহই কমায় না, বরং রক্তনালীতে কোলেস্টেরলের জমায়েত বা 'প্লাক' গঠনের প্রবণতাও দূর করতে পারে। হৃৎপিণ্ডকে সুরক্ষিত রাখতে চিনি ছাড়া প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি পান করা বিশেষ ফলপ্রসূ।

২. বেদানার রস (Pomegranate Juice)

বেদানার রসে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলি এলডিএল-এর জারণ প্রক্রিয়াকে (Oxidation) রুখে দেয়। জারিত এলডিএল ধমনীর অভ্যন্তরে প্লাক তৈরি করার জন্য দায়ী। বেদানার রস এই ক্ষতিকারক জারণ প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ করে ধমনীর প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে।

বিশেষ পরামর্শ: উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ গ্রহণকারী বা নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বেদানার রস পান করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৩. সয় মিল্ক (Soya Milk)

উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের এক দুর্দান্ত উৎস হলো সয়াবিনের দুধ বা সয় মিল্ক। এটি ক্ষতিকারক এলডিএল-এর পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি একই সঙ্গে উপকারী কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়াতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত সয় মিল্ক পান কোলেস্টেরলের মাত্রা ভারসাম্যে রাখতে অপরিহার্য।

৪. টমেটোর রস (Tomato Juice)

টমেটোর রসে লাইকোমিন নামে একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং হৃদযন্ত্রের যত্ন নেয়। এই পানীয়টি শরীরের প্রদাহ কমিয়ে রক্তনালীকে কার্যকরী ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। টমেটোর রস নিয়মিত সেবনে এলডিএল নিয়ন্ত্রণে থাকে, এইচডিএল বৃদ্ধি পায় এবং হার্টের কার্যক্ষমতাও বাড়ে।

৫. বিটের রস (Beetroot Juice)

বিট জুসে বিদ্যমান পলিফেনল ও বেটানিনের মতো উপাদানগুলি রক্তবাহী ধমনীগুলির স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে, প্রদাহ কমায় এবং এলডিএল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। একই সঙ্গে এটি ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতেও অত্যন্ত উপযোগী। উল্লেখ্য, এই রসে চর্বি এবং সোডিয়ামের পরিমাণও বেশ কম।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পাঁচটি পানীয়কে দৈনিক খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার মাধ্যমে জীবনধারায় বড়সড় কোনো পরিবর্তন না এনেও শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। এটি রক্তপ্রবাহ উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কার্যকরভাবে হ্রাস করার একটি প্রাকৃতিক উপায়।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

ইন্দো-বাংলা ফার্মার ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

ইন্দো-বাংলা ফার্মার ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড তাদের সমাপ্ত হওয়া আর্থিক বছরের (৩০ জুন, ২০২৫) জন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা বিতরণের সুপারিশ... বিস্তারিত