ঢাকা, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বদহজম ভেবে ভুল নয়! পেটের ক্যানসার ঝুঁকি কমাবে যে ৫ খাবার

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১০ ১৪:৪৩:৪৮
বদহজম ভেবে ভুল নয়! পেটের ক্যানসার ঝুঁকি কমাবে যে ৫ খাবার

পেটের ক্যানসার: নীরব ঘাতক কেন?

গ্যাস-অম্বল নিয়ে সাধারণ মানুষের যে তীব্র উদ্বেগ, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগ নিয়ে ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। এই প্রাণঘাতী রোগটি প্রায়শই একজন ব্যক্তির শরীরে গুপ্তঘাতকের মতো বাসা বাঁধে। রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ বদহজম, অ্যাসিডিটির সমস্যা বা বারবার জন্ডিসের মতো বিভ্রান্তিমূলক উপসর্গ হিসেবে দেখা দেওয়ায় এর উপস্থিতি বোঝা যায় না। জন্ডিসের লক্ষণ দেখলেই যে ক্যানসারের পরীক্ষা করা হয়, এমনটা নয়। ফলে শরীরের ভিতরে মারণ রোগটির নীরবে বেড়ে ওঠা অজানা থেকে যায়। চিকিৎসকেরা পেটের এই ক্যানসার বৃদ্ধির জন্য জীবনযাত্রায় লাগামহীন অনিয়মকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থের একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাসের কারণেই পেটের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ভয়ংকরভাবে বাড়ছে। অতিরিক্ত মেদ (ওজন) এবং ডায়াবিটিসও এর জন্য সমানভাবে দায়ী।

পাকস্থলী, লিভার, গলব্লাডার ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার মূলত পেটের ক্যানসারের আওতাভুক্ত। এর মধ্যে পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেরিতে এর লক্ষণ প্রকাশ পায়। অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের সবচেয়ে মারাত্মক রূপটি হলো ‘প্যানক্রিয়াটিক ডাক্টাল অ্যাডিনোকার্সিনোমা’।

বিভ্রান্তিমূলক লক্ষণ ও বিপদ সংকেত:

এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো অসহ্য পেটে ব্যথা, যা খাবার খেলে অথবা শুয়ে থাকলে আরও তীব্র হয়। ব্যথা সাধারণত পেটের উপরিভাগ থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে পিঠের দিকে ছড়ায়। এছাড়াও ঘন ঘন ডায়েরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা, দীর্ঘমেয়াদি জ্বর এবং ক্লান্তিও এই ক্যানসারের জটিলতা নির্দেশ করে। যদিও এই সমস্ত লক্ষণগুলিকে অনেকেই গ্যাসের সমস্যা ভেবে ভুল করেন।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, পেটের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা পেতে হলে রোজের খাওয়াদাওয়ার তালিকায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। খাদ্যতালিকা থেকে যদি পাঁচ ধরনের অপরিহার্য উপাদান বাদ পড়ে যায়, তবে ক্যানসারের ঝুঁকি বহুলাংশে বেড়ে যাবে।

ঝুঁকি কমাতে রোজের ডায়েটে ৫টি আবশ্যিক খাবার

ক্যানসারের প্রতিরোধক হিসেবে বিশেষজ্ঞরা এই পাঁচ ধরনের খাবারকে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দিচ্ছেন:

১. তাজা ফল ও সব্জি

ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েড ও ফ্ল্যাভনয়েড সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা অপরিহার্য। গাজর, বিন, ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং শাকের মতো সব্জি এবং লেবু জাতীয় ফল, আপেল, পেয়ারা, পেঁপের মতো ফল খেলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। এই খাবারগুলি পাকস্থলী বা অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার কোষের বিভাজন রোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।

২. সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণ এবং রান্নার সঠিক পদ্ধতি

অনেকেই দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে গ্রিলড খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। চিকেন কবাব, তন্দুরি বা গ্রিলড চিকেনের মতো খাবারগুলিতে সোডিয়াম বা নুনের মাত্রা বেশি থাকে। উচ্চ তাপমাত্রায় মাংস রান্না করলে তা পুষ্টিগুণ হারায় এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত তাপে রান্না করার সময় মাংসের ক্রিয়েটিনিন অ্যামাইনো অ্যাসিড ও শর্করার সঙ্গে মিশে হেটারোসাইলিক অ্যামিনেস (এইচসিএ) তৈরি করে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এর বদলে চিকেন স্ট্যু বা সেদ্ধ চিকেন দিয়ে তৈরি স্যালাড খাওয়া অধিক উপকারী।

৩. পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্য

দৈনিক খাদ্যতালিকায় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামযুক্ত খাবার রাখলে হজমে সহায়ক উৎসেচক ও প্রোটিনের সুষম ভারসাম্য বজায় থাকে। পালংশাক, রাঙাআলু, টম্যাটো, শসা এবং বিভিন্ন রকম ডাল, সূর্যমুখীর বীজ, তিসি, কুমড়োর বীজের মতো খাদ্য এই খনিজগুলির উৎস। এছাড়া ওট্‌স, ডালিয়া ও কিনোয়ার মতো দানাশস্যও স্বাস্থ্যকর। তবে প্রাতরাশের জন্য ব্যবহৃত প্যাকেটজাত সিরিয়ালগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

৪. উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাদ্য

ভাত, রুটি, ডাল, ওটসের মতো খাবারে ফাইবার পাওয়া গেলেও তা অল্প পরিমাণে থাকে। তবে জোয়ার, বাজরা, রাগির মতো শস্যে এর পরিমাণ বেশি। রোজকার খাবারে পর্যাপ্ত ফাইবার থাকলে অম্বল ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। ওট্‌স, সবুজ শাকসব্জি, ব্রাউন রাইস এবং চিয়া বীজেও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান।

৫. প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার

মানবদেহ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ এবং জল— এই ছয়টি স্তম্ভের ওপর নির্ভরশীল। খাবার থেকে এই পুষ্টিগুণগুলি শরীরে শোষণ করতে সাহায্য করে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার দল, যাদের ভারসাম্য বজায় রাখে প্রোবায়োটিক। এটি সামগ্রিক শরীরকে সুস্থভাবে চালনা করার জন্য অপরিহার্য। টক দই হলো প্রোবায়োটিকের সেরা উৎস, যা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। ইডলি, দোসা, আচার এবং ঘোলের (বাটারমিল্ক) মতো গাঁজানো খাবারগুলিতেও প্রোবায়োটিক পাওয়া যায়। কলার মধ্যে প্রচুর ফাইবার থাকে এবং এটি দই ও ওটসের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পুষ্টিগুণ আরও বৃদ্ধি পায়।

আল-মামুন/

ট্যাগ: স্বাস্থ্য টিপস Health tips পেটের ক্যানসার পাকস্থলীর ক্যানসার অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার পেটের ক্যানসারের লক্ষণ পেটের ক্যানসারের কারণ ক্যানসার থেকে বাঁচার উপায় নীরবে ক্যানসার Stomach cancer Gastric cancer Pancreatic cancer Liver cancer Gallbladder cancer Symptoms of stomach cancer Causes of stomach cancer Silent cancer symptoms বদহজম ক্যানসার লক্ষণ অম্বল ক্যানসারের লক্ষণ গ্যাসের সমস্যা ক্যানসার ঘন ঘন জন্ডিস পেটে ব্যথার কারণ প্যানক্রিয়াটিক ডাক্টাল অ্যাডিনোকার্সিনোমা পেটের উপরের দিকে ব্যথা পেট থেকে পিঠে ব্যথা Indigestion cancer symptom Acidity cancer sign Gas problem cancer symptoms Frequent jaundice Pancreatic ductal adenocarcinoma Upper abdominal pain Pain spreading to back ক্যানসার ঝুঁকি কমানোর খাবার ক্যানসার প্রতিরোধক খাদ্য পেটের ক্যানসার প্রতিরোধে খাবার ৫টি ক্যানসার প্রতিরোধক খাবার অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস উচ্চ তাপমাত্রা রান্না ক্ষতিকর Cancer risk reduction diet Cancer preventive foods 5 foods to prevent cancer Foods to avoid cancer Unhealthy eating habits High heat cooking risk প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার তাজা ফল ও সবজি ভিটামিন সি খাবার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম খাবার এইচসিএ (HCA) ক্ষতিকর গ্রিলড খাবার ও ক্যানসার টক দই ওটস কিউনোয়া Probiotic rich foods High fiber foods Fresh fruits and vegetables Vitamin C for cancer Potassium and magnesium foods HCA cancer risk Grilled food and cancer Curd Oats Quinoa স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বাঙালি ও গ্যাস অম্বল ওজন ও ডায়াবেটিস ক্যানসার Healthy lifestyle Diet for stomach health Weight and diabetes cancer risk Bengali acidity problem

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ