ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘নিউজ করে কী ছিঁড়বেন? ওই নারীর মধ্যেই সমস্যা’

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ মে ২৬ ২২:৫৫:৩৭
‘নিউজ করে কী ছিঁড়বেন? ওই নারীর মধ্যেই সমস্যা’

স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা পরিচয়ে জেসমিনকে বিয়ে করেন খোরশেদ। চাকরিস্থল পরিবর্তন করে এখন জেসমিনকে পাত্তাই দিচ্ছেন না তিনি। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার পর তাকে হত্যারও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওই পাসপোর্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

বিয়ের পর বগুড়া শহরের জহুরুল নগর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সংসার ভালোই চলছিল। একপর্যায়ে জেসমিন অন্তঃসত্ত্বা হন। আর তাতেই সুখের সংসারে ভাঙন শুরু হয়।

বদলি নিয়ে বগুড়ায় জেসমিনকে ফেলে লাপাত্তা হয়ে যান অভিযুক্ত স্বামী বগুড়ার পাসপোর্ট অফিসের সাবেক সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম। বর্তমানে তিনি মাগুরা জেলায় কর্মরত।

খোরশেদ আলমের বিচার চেয়ে গত ২০ ফেব্রয়ারি মাগুরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন প্রতারিত ওই নারী। এছাড়া স্বামীর হুমকি-ধামকির বিষয়ে গত ৭ মার্চ বগুড়া সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি নং ৫০৬) করা হয়েছে।

অভিযোগে জেসমিন বলেন, তিনি স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুই সন্তানের জননী। বগুড়া পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় খোরশেদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দেখাদেখির একপর্যায়ে খোরশেদ নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে জেসমিনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

পরে মুসলিম শরীয়তের বিধান মতে বগুড়া সদরের শেখেরকোলা কাজী অফিসের মাধ্যমে (রেজি: এ, বহি- ৩/১৬) ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে কাবিননামা মূলে ২০১৬ সালের ২ জুন জেসমিনকে বিয়ে করেন খোরশেদ।

তখন নিজের পিতার নাম ও ঠিকানা গোপন রাখেন ওই প্রতারক। তবুও বিশ্বাস রেখে শহরের জহুরুল নগরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন। জেসমিন অন্তঃসত্ত্বা হতেই বগুড়া থেকে মাগুরা জেলায় বদলি হয়ে যান ওই পাসপোর্ট কর্মকর্তা।

এরপর থেকেই জেসমিনের সঙ্গে স্বামী খোরশেদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। স্বামীর খোঁজে ওই নারী মাগুরা জেলার পাসপোর্ট অফিসে ছুটে যান। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন খোরশেদ। গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি দিয়ে জেসমিনকে পাসপোর্ট অফিস থেকে বিদায় করে দেন।

প্রতারণার শিকার জেসমিন বলেন, ‘আমি মাগুরায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি আমার স্বামীর আগের দু-তিনটি স্ত্রী আছে। পৃথক পৃথক সংসার ও তাদের সন্তান রয়েছে। বিষয়টির সত্যতা জানতে চাইলে খোরশেদ কোনো জবাব দেয়নি।’

তিনি বলেন, কিছুদিন পর তাকে ফোন করে নিজের অসুস্থতার কথা জানান খোরশেদ। এটাও ছিল ফাঁদ। গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্বামীর টানে আবারো মাগুরা পাসপোর্ট অফিসে ছুটে যান তিনি। ওইদিন তাকে বেধড়ক মারধর করলে তা গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।

জেসমিন বলেন, একপর্যায়ে আত্মহত্যার হুমকি দিলে আতঙ্কে পড়েন খোরশেদ। এরপর কৌশলে রাতের আঁধারে রাজশাহীতে পদ্মার পাড়ের কয়েক মাইল দূরে নির্জনস্থানে নিয়ে তাকে খুন করার চেষ্টা করা হয়।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পাসপোর্ট কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিয়ের কথা স্বীকার করলেও নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে পত্রিকায় নিউজ করে কী ছিঁড়বেন। ওই নারীর মধ্যেই সমস্যা।’

খোরশেদ আরও বলেন, ‘বগুড়া চাকরিকালে আমি অফিসে থাকার সুযোগে একাধিক অপরিচিত পুরুষ বাসায় আসা-যাওয়া করতো। আমি নই, ওই নারীই আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে