ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

তবে কি আফগানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হচ্ছে বাংলাদেশ?

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ জুন ০৬ ১২:৫৯:৪৩
তবে কি আফগানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হচ্ছে বাংলাদেশ?

এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিল টেস্ট ক্রিকেটে নাম লেখানোর অপেক্ষায় থাকা আফগানিস্তান, যা তাদের জন্য বিশাল এক অর্জন। কারণ জিম্বাবুয়ের পর টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো কোনো সিরিজ জিতল আফগানিস্তান। আর টি-টোয়েন্টিতে আফগান্তিানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারল বাংলাদেশ। আফগানদের এমন সাফল্যে বাংলাদেশের সামনে এখন হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই।

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিটি ছিল বাংলাদেশের টিকে থাকার লড়াই। কিন্তু ভারতের দেরাদুনে মঙ্গলবার টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে পুরনো অভ্যাস ডট বল আর ‘রশিদ জুজু’তে বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায় মাত্র ১৩৪ রানেই। জবাবে ধীর-স্থির ব্যাটিংয়ে ছয় উইকেটের জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান।

স্বল্প পুঁজির পরও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জয়ের আশা জাগিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রুবেল হোসেনের করা ১৯তম ওভারে মোহাম্মদ নবীর তোলা ঝড় এক নিমেষেই সেই সম্ভাবনা গুঁড়িয়ে দেয়।

১৩৫ রানের ছোট লক্ষ্য। সেটা যে আফগানদের মাথায় ছিল, তা তাদের ব্যাটিং দেখেই বোঝা গেছে। ধীর-স্থির শুরুর পথে বাংলাদেশ স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর ওভার থেকে কোনো রানই নেননি মোহাম্মদ শাহজাদ ও উসমান গনি। এ ছাড়া উইকেট যে ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ নয়, সেটাও বুঝতে দেরি করেননি তারা। গুনে গুনে পা ফেলেছেন শাহজাদ-গনিরা।

প্রথম উইকেট পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৮ রান পর্যন্ত। ব্যাট হাতে মহা কার্যকর ২১ রান করা আবু হায়দার রনি বল হাতেও ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হন। ২৪ রান করা শাহজাদকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন বাঁহাতি এই পেসারই। ২১ রান করা উসমান গনিকে ফিরিয়েছেন আরেক পেসার রুবেল হোসেন।

কিন্তু দলকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন হুমকি হয়ে ওঠা সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ও মোহাম্মদ নবী। শেনওয়ারি তখন হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে। এমন সময় তাকে হতাশায় ডুবিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৪১ বলে দুটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৪৯ রান করে থামতে হয় তাকে।

নবীর ঝড় তখনো বাকি। ১২ বলে দরকার তখন ২০ রান। বোলিংয়ে এলেন রুবেল। গুনে গুনে নবীর দুটি চার ও দুটি ছয়। সাত বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে আফগানিস্তান। মাত্র ১৫ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাচসেরা নবী।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ এদিনও ভালো শুরু করতে পারেনি। অবশ্য আগের দিনের মতো অন্তত প্রথম বলে উইকেট হারায়নি সাকিব আল হাসানের দল।

দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে খেই হারিয়েছেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। শাপুর জাদরানের একটি ডেলিভারি তুলে মারতে গিয়ে রশিদ খানের হাতে ধরা পড়েন আগের ম্যাচে ৩০ রান করা লিটন।

টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো নন স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে ইনিংস শুরু করা তামিম এদিন অতি সাবধানী ছিলেন। তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়ে সাব্বির রহমান ভালো কিছু করার ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন। শুরুর চাপ কাটিয়ে উঠতে সময় নেননি এ দুজন।

সাব্বির দলের হাল বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। ৯ বলে তিন চারে ১৩ রান করে ফেরেন তিনি।

তামিম তখনো একই মেজাজে। সঙ্গী হিসেবে পান মুশফিকুর রহিমকে। এই জুটিতে চলে কিছুটা লড়াই, বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ৭৫ রানে। তখন কেবল দশম ওভার চলে। সব মিলিয়ে বড় স্কোর গড়ার পথেই ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সাব্বিরকে ফেরানো আফগান স্পিনার মোহাম্মদ নবী এ পথে বাধার দেয়াল তুলে দাঁড়ান। ২২ রান করা মুশফিককে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তিনি।

এরপরই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। তামিম ঠান্ডা মেজাজে এক পাশ আগে রাখলেও অন্য প্রান্তে চলতে থাকে আসা-যাওয়ার মিছিল।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৪ রান করলেও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা উইকেটে গেছেন আর ফিরেছেন। ১৬তম ওভারে সাকিব, তামিম ও মোসাদ্দেককে ফিরিয়ে বাংলাদেশের বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনার পথে লাগাম টেনে দেন টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ের সেরা বোলার রশিদ খান।

মূলত ওই ওভারেই দিক হারিয়ে ফেলে বড় সংগ্রহের পথে থাকা বাংলাদেশ। তামিম ৪৮ বলে ৪৩ রান করে যাওয়ার পর পেসার আবু হায়দার রনি যা করেছেন, সেটা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কারণ পুরোদস্তর ব্যাটসম্যানরা যেখানে ব্যর্থ, সেখানে ব্যাট হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন তিনি। ১৪ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় ২১ রানে অপরাজিত থাকেন রনি। তার ব্যাটেই মূলত ১৩৪ রানে পৌঁছায় বাংলাদেশ।

এদিনও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নাকানি-চুবানি খাইয়ে ছেড়েছেন রশিদ খান। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৩ রান খরচায় তিন উইকেট নেওয়া এই আফগান লেগ স্পিনার এদিন আরও ভয়ঙ্কর ছিলেন। চার ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় চার উইকেট তুলে নেন তিনি। নবী দুটি এবং শাপুর জাদরান ও করিম জানাত একটি করে উইকেট নেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে