ঢাকা, বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

টি-টোয়েন্টিতে ৫২৫ রানের অবিশ্বাস্য ম্যাচ দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ এপ্রিল ২৭ ০৯:৪৯:২৮
টি-টোয়েন্টিতে ৫২৫ রানের অবিশ্বাস্য ম্যাচ দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব

ঘরের মাঠে ২৬১ রান করেও জিততে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স। নাইটদের হারাতে পঞ্জাব কিংস বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলেছে। আইপিএল তথা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে পঞ্জাব। ৮ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে ম্যাচটি জেতে পঞ্জাবের দল। ২৬১ রান তাড়া করেও হারতে হবে, হয়তো ভাবতেই পারেননি কেকেআর সমর্থকেরা। কিন্তু এদিন সব হিসেবে ওলটপালট করে দিলেন জনি বেয়ারস্টো। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করলেন প্রভসিমরন সিং এবং শশাঙ্ক সিং। তিন তারকার মিলিত লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত হার মানে কেকেআর। এদিন শশাঙ্ক এবং প্রভসিমরন হাফসেঞ্চুরি করলেও, সেঞ্চুরি হাঁকান বেয়ারস্টো।

ম্য়াচের পর কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার বলেছেন, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ব্যাটিং করেছে তা অসাধারণ ছিল। যেভাবে সুনীল নারিন এবং ফিল সল্ট ব্যাট করেছেন, সেই পারফরম্যান্স দেখা খুবই আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। দুই দলই অসাধারণ খেলেছে এদিন।’

শ্রেয়স আরও বলেছেন, ‘এটি সেই ম্যাচগুলির মধ্যে একটি, যেখানে আপনাকে সাজঘরে ফিরে এসে দেখতে হবে, কোথায় ভুল হয়েছে। বিশেষ করে যখন ২৬০ রানের (২৬২ রান) স্কোর রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। এটি খেলোয়াড়দের জন্য একটি দুর্দান্ত শিক্ষা। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে ফিরতে হবে। প্রথম বল থেকেই সুনীল নারিনকে আক্রমণ করতে দেখা দারুণ অভিজ্ঞতা। আশা করি তিনি আমাদের জন্য এভাবেই পারফর্ম করতে থাকবেন।’

শুক্রবার হাই স্কোরিং ম্যাচে কেকেআর-এর বোলারদের একেবারে কাঁদিয়ে ছাড়ে পঞ্জাব কিংস। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নাইটরা ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬১ রান করেছিল। ওপেন করতে নেমে সুনীল নারিন এবং ফিল সল্ট একেবারে ঝড় তোলেন। তারা প্রথম উইকেটে ১০.২ ওভারে ১৩৮ রান করে ফেলেছিল। ৩২ বলে ৭১ করেন নারিন। সল্ট করেন ৩৭ বলে ৭৫ রান। এছাড়া ২৩ বলে ৩৯ করেন বেঙ্কটেশ আইয়ার, ১২ বলে ২৪ করেন আন্দ্রে রাসেল, ১০ বলে ২৮ করেন শ্রেয়স আইয়ার।

রান তাড়া করতে নেমে পঞ্জাব ব্যাটাররাও সুনামি বইয়ে দেন। প্রভসিমরন সিং এবং জনি বেয়ারস্টো মিলে প্রথম থেকেই বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন। ২০ বলে ৫৪ করে প্রভসিমরন রানআউট হলেও, বেয়ারস্টো সেঞ্চুরি হাঁকান। তাঁকে এর পর সঙ্গত করেন শশাঙ্ক সিং। ৪৮ বলে অপরাজিত ১০৮ করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বেয়ারস্টো। ২৮ বলে ৬৮ করে অপরাজিত থাকেন শশাঙ্ক। ১৮.৪ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ২৬২ করে ফেলে পঞ্জাব কিংস।

অতীতে এত রান তাড়া করে কোনো দল জিততে পারেনি। আগের রেকর্ড ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০২৩ সালে সেঞ্চুরিয়নে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়‌ের বিরুদ্ধে ২৫৯ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। তৃতীয় স্থানে মিডলসেক্স। সারের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে ২৫৩ রান তাড়া করে জিতেছিল দলটি।

এই তালিকায় দাপট শুধু আইপিএলের। প্রথম তিন স্থানেই রয়েছে আইপিএলের তিনটি ম্যাচ। সবক’টাই হয়েছে এ বছর। কলকাতা-পাঞ্জাব ম্যাচে মোট ৪২টি ছয় রয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে হায়দরাবাদ-মুম্বাই এবং হায়দরাবাদ-ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচ। দু’টিতেই ৩৮টি করে ছয় হয়েছে। ৩৭টি ছয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে বল্‌খ লেজেন্ডস এবং কাবুল জোয়াননের ম্যাচ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের নিরিখে এটি প্রথম স্থানে। এর আগে ২০২০ সালে রাজস্থান শারজায় ২২৪ তাড়া করে জিতেছিল এই পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে। এ বছর ইডেনে কিছু দিন আগে এই রাজস্থানই ২২৪ রান তাড়া করে জিতেছিল কলকাতার বিরুদ্ধে। ২০২১ সালে ২১৯ তাড়া করে চেন্নাইকে হারিয়েছিল মুম্বাই।

কলকাতার বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের ব্যাটারেরা মোট ২৪টি ছয় মেরেছেন। এটি সর্বোচ্চ। এর আগে এই আইপিএলেই ব্যাঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের ব্যাটারেরা ২২টি ছয় মেরেছিলেন। দিল্লির বিরুদ্ধে এবারই হায়দরাবাদের ব্যাটাররা ২২টি ছয় মেরেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই রেকর্ড নেপালের। গত বছর এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে নেপাল ২৬টি ছয় মেরেছিল।

এ বছর হায়দরাবাদ বনাম ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫৪৯ রান হয়েছিল। তার আগে হায়দরাবাদ বনাম মুম্বাই ম্যাচে ৫২৩ রান হয়েছিল। শুক্রবার ইডেনে সেই একই রান হলো। কলকাতা এবং পাঞ্জাবের ইনিংস মিলিয়ে উঠল ৫২৩ রান। তার আগে ২০১০ সালে চেন্নাই বনাম রাজস্থানের ম্যাচে ৪৬৯ রান ১৩ বছর সবার উপরে ছিল।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে